বিশেষ প্রতিনিধি :
ফেনীতে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে অঘটনের আশংকা জয়নাল আবেদীন হাজারীর
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ফেনীতে অঘটনের আশংকা প্রকাশ করেছেন আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য জয়নাল আবেদীন হাজারী।তিনি ছাড়াও জেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক আজহারুল হক আরজু এবং সাবেক যুগ্ম আহবায়ক শাখাওয়াত হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা থাকতে পারে বলেও তিনি মনে করেন। বহুল আলোচিত সাবেক এ সংসদ সদস্য বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাতে তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লাইভে এসে এ আশংকার কথা কথা উল্লেখ করে প্রশাসনকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান।নিজ দলীয় প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রে পা না দিতে ভক্ত,অনুরক্ত ও সমর্থকদেরও আহবান জানান তিনি।
এ বিষয়ে তিনি দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে অবহিত করেছেন বলেও জানান।
জয়নাল হাজারী বলেন,“আমি খবর পাচ্ছি-২১ আগস্ট এর মত ঘটনা ঘটিয়ে হয়তবা শাখাওয়াত,আরজু ও আমাকে হত্যা করতে চাইবে।আমি আগেই বলে রাখলাম-আমাদের হত্যার পরিকল্পনা হয়তবা কেউ দিয়ে গেছে। আমি নিশ্চয়তা দিয়ে কোন প্রমান দিতে পারব না। আমি জানান দিলাম।” এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পৌরসভার এক কাউন্সিলরসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে তাদের কঠোর নজরধারীতে রাখার জন্য তিনি আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান।
তিনি নিজ দলীয় প্রতিপক্ষের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন,“আমাকে মেরে ফেললে কী লাভ? আমিতো এমনিই মরবো।যে দেশে আমাদের জাতির পিতা নিহত হয়েছেন, সেদেশে আমিও মরে গেলে দু:খ নেই। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে ৫৬ বছর বয়সে, আমারতো পরিপূর্ণ বয়স।আগামী ২০ আগস্ট ৭৫ পূর্ণ হবে।আমাকে মারলে এ মহারাজ্য, রাজনীতি-কতৃত্ব ওদের সব শেষ হয়ে যাবে। ”
তিনি বহুল আলোচিত আওয়ামীলীগ নেতা একরাম হত্যা প্রসঙ্গ টেনে বলেন,“আমার পত্রিকায় প্রকাশ করেছিলাম-একরাম,শাখাওয়াত,আরজুকে কিছুদিনের মধ্যে খুন করতে পারে।এর দুইদিনের মাথায় একরামকে হত্যা করা হয়েছে।”
উস্কানীমুলক তৎপরতা বা ষড়যন্ত্রে পা না দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন,“ বড় ধরনের বাধা পেলে আপনারা ফিরে যাবেন। কোন রকম বাড়াবাড়িতে যাবেন না।মুজিবকে স্মরণে রাখার জন্য ফেনীতে মুজিব উদ্যান করেছি। ফেনীতে আর কোন স্থাপনায় মুজিবের নাম নেই। ১২ বছর ফেনীতে কোন অনুষ্ঠান করতে পারিনি। এবার ১৫ আগস্টে ফেনীতে প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময় করবো। অনুসারীদের উদ্দেশ্যে হাজারী আরো বলেন, ১৫ আগস্ট ঘিরে ফেনীতে অপতৎপরতা শুরু হয়েছে। উসকানীমূলক তৎপরতায় পা দেবেন না। বিভিন্নভাবে বানচাল করার ষড়যন্ত্র করবে।ষড়যন্ত্রে পা দেবেন না। বিরোধী পক্ষ বাধা দিলে পিছু হটতে হবে। কোন ঝামেলায় জড়ানো যাবেনা।”
তাছাড়া মুজিব উদ্যানে এত মানুষের স্থান সংকুলান হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।১৫ আগস্ট ফেনীতে তার কর্মসুচিতে আসতে প্রায় দুই লাখ লোক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও তিনি দাবী করেন।কর্মসুচির মধ্যে মাস্টার পাড়াস্থ তার শৈল কুটির প্রাঙ্গন ‘মুজিব উদ্যানে’ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময় করবেন।এছাড়া দলীয় নেতাকর্মীদের সাথেও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।‘পরিবেশ থাকলে’ মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন বলেও জানান।
মিডিয়ার সমালোচনা করে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক এ সাধারন সম্পাদক বলেন, “মিডিয়া এখনও আমার পক্ষে নয়।আমার যদি দোষ নাও হয়,আমার মানুষদের দোষ নাও হয়। মিডিয়া হয়ত বলে দেবে এরা এ দোষ করেছে।তাহলে সবার কাছে ভুল ম্যাসেজ যাবে।”
দলের উপদেষ্টা হওয়ার পর জেলা পর্যায়ের নেতৃত্বে আসার তার আর আগ্রহ নেই বলেও উল্লেখ করেন জয়নাল হাজারী।তিনি মুজিব বর্ষের জাতীয় শোক দিবসে লন্ডন সফরে থাকায় জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর সমালোচনা করে বলেন,“১৫ আগস্টের পর গেলে এমন কী ক্ষতি হত?” এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।তবে তার ঘনিষ্ট সুত্র বলছে,ফেনীর শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করতে জয়নাল হাজারী ও তার অনুসারীরা অপতৎপরতা চালাচ্ছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তারা জয়নাল হাজারীর সমালোচনা করেন।